বাংলাদেশের জনপ্রিয় পর্যটন স্থান: ভ্রমণ, খাবার ও থাকার পূর্ণ গাইড
বাংলাদেশ প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ এক অনন্য দেশ। সমুদ্র থেকে পাহাড়, বনভূমি থেকে ঐতিহাসিক নিদর্শন — প্রতিটি প্রান্তেই রয়েছে বিস্ময়। আসুন, জেনে নিই দেশের কিছু জনপ্রিয় পর্যটন স্থান এবং সেখানে যাওয়া, খাওয়া ও থাকার সুবিধা সম্পর্কে:
কক্সবাজার: বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত
যাওয়া:
ঢাকা থেকে সরাসরি বিমান, বাস অথবা ট্রেনযোগে চট্টগ্রাম হয়ে কক্সবাজার পৌঁছানো যায়। বাসে ১০-১২ ঘণ্টা, বিমানে ১ ঘণ্টার মতো সময় লাগে।
খাওয়া:
কক্সবাজারের রেস্টুরেন্টগুলোতে নানা ধরনের সি-ফুড (কাঁকড়া, লবস্টার, চিংড়ি) পাওয়া যায়। সুস্বাদু 'কফি হাউজ', 'রানার রেস্টুরেন্ট' ও 'সী-প্যালেস রেস্টুরেন্ট' বেশ জনপ্রিয়।
থাকা:
কক্সবাজারে রয়েছে নানা মানের হোটেল ও রিসোর্ট — হোটেল সী-প্যালেস, হোটেল দি কক্স টুডে, মারমেইড বিচ রিসোর্ট ইত্যাদি। কম বাজেটের জন্য বহু গেস্ট হাউসও আছে।
সুন্দরবন: পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন
যাওয়া:
খুলনা বা মংলা বন্দর হয়ে ট্রলার বা লঞ্চে সুন্দরবনে প্রবেশ করা যায়। ঢাকায় থেকে খুলনায় ট্রেনে বা বাসে যাওয়া সুবিধাজনক।
খাওয়া:
ভ্রমণ প্যাকেজের সাথে সাধারণত খাওয়া-দাওয়া অন্তর্ভুক্ত থাকে। ভ্রমণের আগে পর্যাপ্ত খাবার ও পানির ব্যবস্থা করে নিতে হয়।
থাকা:
সুন্দরবনে থাকার জন্য নির্দিষ্ট কিছু রেস্টহাউস ও লঞ্চের ব্যবস্থা আছে। খুলনা শহরে থাকার জন্য হোটেল রয়্যাল, হোটেল টাইগার গার্ডেন ইত্যাদি ভালো অপশন।
সাজেক ভ্যালি: মেঘের রাজ্য
যাওয়া:
খাগড়াছড়ি হয়ে সাজেকে যেতে হয়। ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি পর্যন্ত বাসে যাওয়া যায়, তারপর চাঁদের গাড়িতে (স্থানীয় খোলা জিপ) সাজেকে ওঠা হয়।
খাওয়া:
স্থানীয় আদিবাসী রেস্টুরেন্টে বাঁশের ভেতরে রান্না করা মাংস, পাহাড়ি ভর্তা ও ভাত বেশ জনপ্রিয়।
থাকা:
সাজেকে অনেক রিসোর্ট তৈরি হয়েছে — রুনময় রিসোর্ট, সাজেক রিসোর্ট, মেঘmachang Cottage ইত্যাদি। রাতে মেঘে ঢাকা রিসোর্টে থাকা এক অনন্য অভিজ্ঞতা।
সেন্ট মার্টিন্স দ্বীপ: প্রবালের স্বর্গ
যাওয়া:
কক্সবাজার বা টেকনাফ থেকে জাহাজে (নভেম্বর থেকে মার্চ) সেন্ট মার্টিন্স যাওয়া যায়। ভ্রমণ মৌসুমে আগাম টিকিট নিশ্চিত করা উচিত।
খাওয়া:
টাটকা সামুদ্রিক মাছের বিভিন্ন পদ এখানে পাওয়া যায়। 'প্রিন্স রেস্টুরেন্ট', 'ব্লু মেরিন ক্যাফে' বেশ জনপ্রিয়।
থাকা:
নীল দিগন্ত রিসোর্ট, ব্লু মেরিন রিসোর্ট এবং অনেক কটেজ রয়েছে, তবে মৌসুমে আগে থেকে বুকিং করে রাখা নিরাপদ।
শ্রীমঙ্গল: চায়ের রাজধানী
যাওয়া:
ঢাকা থেকে ট্রেন বা বাসে সরাসরি শ্রীমঙ্গল যাওয়া যায়।
খাওয়া:
শ্রীমঙ্গলে 'রাধারমণ রেস্টুরেন্ট', 'নীহারিকা রেস্টুরেন্ট' এবং স্থানীয় খাবারের দোকানগুলো বেশ জনপ্রিয়। সাত রঙের চা (সেভেন লেয়ার টি) অবশ্যই চেখে দেখতে হবে।
থাকা:
গ্রীন লিফ গেস্ট হাউস, টি রিসোর্ট অথবা লাউয়াছড়া রিসোর্টে থাকা যায়। অনেকগুলো হোম-স্টে অপশনও আছে।
ভ্রমণ টিপস:
-
ভ্রমণের আগে আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেখে নিন।
-
নিরাপদ খাবার ও বিশুদ্ধ পানি নিশ্চিত করুন।
-
পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন এবং প্রকৃতি রক্ষা করুন।
-
জনপ্রিয় স্থানে আগাম বুকিং করুন, বিশেষ করে ছুটির মৌসুমে।
বাংলাদেশ ভ্রমণ, পর্যটন স্থান, কক্সবাজার, সুন্দরবন, সাজেক ভ্যালি, সেন্ট মার্টিন্স দ্বীপ, শ্রীমঙ্গল, ভ্রমণ গাইড, বাংলাদেশ প্রকৃতি, ছুটির পরিকল্পনা, পাহাড় ভ্রমণ, সমুদ্র সৈকত, চা বাগান ভ্রমণ, লঞ্চ ভ্রমণ, সি-ফুড খাবার, মেঘের রাজ্য, প্রবাল দ্বীপ, প্রকৃতি প্রেম, ট্রাভেল ফিচার, হোটেল রিসোর্ট, ভ্রমণ টিপস