আজ ১৫ জুন, বিশ্বজুড়ে পালিত হচ্ছে বিশ্ব বাবা দিবস। সন্তানদের জীবনে এক নিঃশব্দ লড়াকু, অক্লান্ত পরিশ্রমী এবং ভালোবাসার স্থিতিশীল প্রতীক—’বাবা’—কে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় স্মরণ করার এই বিশেষ দিনটি এক গভীর আবেগে ভাসায় পরিবারকে।
বাবা—একটি শব্দ, যার মাঝে লুকিয়ে আছে দায়িত্ব, সুরক্ষা আর নিঃস্বার্থ ভালোবাসা। সন্তানের চোখে কখনো সুপারহিরো, কখনো পাহাড়সম সাহসের নাম বাবা। আর আজকের এই দিনে অনেকেই হয়তো স্মৃতিচারণ করছেন তাদের জীবনের সেই মানুষটির, যিনি দিনের পর দিন নিজের স্বপ্ন বিসর্জন দিয়ে সন্তানের ভবিষ্যৎ গড়েছেন।
ঢাকার মিরপুরের বাসিন্দা মনিরুল ইসলাম বলেন, “আমার বাবা একটা কাঠের দোকানে কাজ করতেন। কখনো আমাদের বুঝতে দেননি কষ্টের কথা। আজ আমি নিজেই বাবা, তখন বুঝি, তিনি কী কষ্ট সহ্য করে আমাদের মানুষ করেছেন।”
বিশ্ব বাবা দিবসের প্রচলন ১৯১০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনের সোনোরা স্মার্ট ডড নামক এক নারী দ্বারা শুরু হয়, যিনি নিজের বাবার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে দিনটি পালনের প্রস্তাব দেন। ধীরে ধীরে তা ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বজুড়ে। যদিও দিনটি উদযাপনের তারিখ ভিন্ন ভিন্ন দেশে ভিন্ন হয়, তবু জুন মাসের তৃতীয় রবিবার অধিকাংশ দেশেই এই দিন পালিত হয়।
অন্য খবর পড়ুন : স্মার্ট কার্ড তৈরি হয়েছে কি না জানার উপয়!
এই দিনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই বাবাকে নিয়ে লেখা কবিতা, ছবি, স্ট্যাটাস পোস্ট করছেন। স্কুল-কলেজেও পালিত হচ্ছে ‘বাবা দিবস’ উপলক্ষে বিশেষ আয়োজন। কোথাও বাবা ও সন্তানের জন্য চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, কোথাও আবৃত্তি, আবার কোথাও একসাথে কেক কাটার ছোট্ট মিলনমেলা।
তবে এই দিনে যাঁদের বাবা নেই, তাঁদের জন্য দিনটি হয়ে ওঠে কিছুটা বিষণ্ন। কিশোরগঞ্জের বাসিন্দা তাহসিনা জান্নাত বলেন, “আমার বাবা আজ নেই। কিন্তু আজকের দিনটায় তাঁর ব্যবহৃত কলমটা হাতে নিয়ে একটা চিঠি লিখেছি। শুধু বাবার নামে…”
আজকের এই দিনে আমরা যেন শুধু একটি পোস্ট দিয়ে নয়, অন্তর থেকে উপলব্ধি করি একজন বাবার মমতা, সাহস আর জীবনভর করা ত্যাগকে। তাঁর সেই গোপন কান্না, যেটা তিনি লুকিয়ে রেখেছিলেন সন্তানের হাসির আড়ালে, সেটিই বাবার সবচেয়ে নিঃস্বার্থ ভালোবাসার প্রমাণ।
বিশ্ব বাবা দিবস হোক প্রতিটি বাবার প্রতি কৃতজ্ঞতার জানান দেওয়ার দিন।
খবরটি শেয়ার করুন